কঠিন পদার্থের বৈশিষ্ট্য ও শ্রেণীবিভাগ
- Update Time : 09:14:21 am, Sunday, 15 December 2024 38 Counter
আমরা জানি পদার্থ সাধারণত ৪ টি অবস্থায় থাকতে পারে। সেগুলি হচ্ছে কঠিন, তরল, বায়বীয় এবং প্লাজমা। যদিও প্লাজমা পদার্থের একটি বিশেষ অবস্থা যেটি তৈরি করা বেশ কঠিন ব্যাপার। আজকে আমি আলোচনা করব কঠিন পদার্থের বৈশিষ্ট্য এবং এর শ্রেণীবিভাগ সম্পর্কে।
কঠিন পদার্থ কিভাবে তৈরি হয়
আমরা জানি প্রতিটি বস্তুকণাই সুক্ষ সুক্ষ অণু এবং পরমাণু দ্বারা গঠিত। যখন কোন পদার্থের এই অনু এবং পরমাণু গুলো একে অপরের সাথে দৃঢ়ভাবে লেগে থাকে তখন সেটাকে বলা হয় কঠিন পদার্থ।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায় পানি কিংবা তরল জাতীয় কোন বস্তুর অনু পরমাণু গুলোর মধ্যে আকর্ষণ শক্তি খুবই দুর্বল। যার কারণে একে অপর থেকে খুব সহজেই বিচ্ছিন্ন করা যায়। কিন্তু কঠিন পদার্থের অণু পরমাণু গুলো একে অপরের সাথে অনেক শক্ত বন্ধনে আবদ্ধ। আর এই বন্ধন গুলির যত বেশি শক্তিশালী হয় পদার্থ তত বেশি কঠিন হয়। আবার যখন কোন কঠিন পদার্থকে তাপ দেয়া হয় তখন সে বন্ধন গুলো আস্তে আস্তে দুর্বল হতে পারে এবং কঠিন পদার্থটি তরল এবং তরল থেকে পরবর্তীতে বাষ্পে পরিণত হয়।
কঠিন পদার্থের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি
১। প্রতিটি কঠিন পদার্থরে একটি নির্দিষ্ট আকার আছে। আপনি যদি এক টুকরো ইট কিংবা পাথরের কথা চিন্তা করেন তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতে পারবেন। পাথর, ইট, কাঠ, প্লাস্টিকের বক্স ইত্যাদি সকল কঠিন বস্তুরই নির্দিষ্ট আকার আছে।
২। কঠিন পদার্থের বৈশিষ্ট্য গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো এটির ওজন রয়েছে।
৩। সকল ধরনের কঠিন পদার্থ একটি নির্দিষ্ট স্থান বা জায়গা দখল করে যেটিকে আমরা আয়তন বলে থাকি। আমরা বাসায় যেয়ে সকল আসবাবপত্র বা ফার্নিচার ব্যবহার করে সেগুলো প্রায় সবকিছুই কঠিন পদার্থ দিয়ে তৈরি। তাইতো তারা ঘর জুড়ে একটা জায়গা দখল করে থাকে।
৪। এই পদার্থ গুলি বল প্রয়োগে বাধা প্রদান করে। আপনি যদি কোন লোহার বস্তু কিংবা দেয়ালে ধাক্কা প্রদান করে তাহলে সেটিও আপনাকে সমপরিমাণ বল প্রয়োগ করে ধাক্কা প্রদান করবে বা বাধা দেবে।
৫। আমরা জানি কোন কঠিন পদার্থকে তার প্রয়োগ করলে সেটি প্রথমে তরলে এবং পরবর্তীতে বাষ্পে পরিণত হয়। তবে এর ব্যতিক্রমও কিছু বস্তু রয়েছে। যে বস্তু গুলোতে তাপ প্রয়োগ করলে তরলের পরিণত না হয়ে সরাসরি বাষ্পে করে রূপান্তরিত হতে পারে। যেমন ন্যাপথলিন।
কঠিন পদার্থের শ্রেণীবিভাগ
কঠিন পদার্থ গুলিও আবার বেশ কয়েকটি শ্রেণী বিভাগকে বিভক্ত। এর মধ্যে প্রধান ২ টি ভাগ হচ্ছে ধাতু এবং অধাতু।
ধাতু হচ্ছে সেই সকল বস্তু যেগুলি এর ভেতর দিয়ে বিদ্যুৎ পরিবহন করতে পারে। যেমন লোহা, তামা, কপার ইত্যাদি। এমনকি আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ করে। এ ধরনের পদার্থ গুলো অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে থাকে এবং গলনাঙ্কও অনেক। এই ধরনের ধাতব পদার্থ গুলি বিজ্ঞান বিভিন্ন ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি তৈরি ইত্যাদি কাজে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মূলত পদার্থের ভিতরে ইলেকট্রনের বিন্যাসের কারণেই ধাতব বৈশিষ্ট্য ধারণ করে এরা।
আবার অধাতু গুলিও কঠিন পদার্থের অন্তর্ভুক্ত। তবে অধাতু বিদ্যুৎ পরিবহন করে না এবং আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ ও করে না। যেমন প্লাস্টিক, কাঠ ইত্যাদি। এরা কঠিন পদার্থের অন্য সকল বৈশিষ্ট্য গুলি ধারণ করলেও বিদ্যুৎ পরিবহন করতে পারে না।
এছাড়াও কঠিন পদার্থের বৈশিষ্ট্যের পাশাপাশি এর শ্রেণীবিভাগও রয়েছে অনেক। যেমন
সলিড অজৈব যৌগ গুলোর সমন্বয়ে গঠিত হয় সিরামিক যেটিও একটি কঠিন পদার্থ। আপনারা নিশ্চয়ই সিরামিকের বিভিন্ন থালা-বাসন ইত্যাদি দিয়ে ঘর সাজানোর জিনিসপত্রের কথা শুনেছেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ভর্তি যোগ্যতা জানতে এখানে প্রবেশ করুন।